দীর্ঘদিন ধরে আদালত ও প্রেস সংশ্লিষ্ট একটি চক্র জেলা আইনজীবী সমিতির জাল উকালতনামা তৈরী করে ভুয়া স্ট্যাম্প ও সাক্ষর দিয়ে আদালতে প্রায় ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছে মক্কেলদের কাছে। অন্যান্য বছর কিংবা মাসের তুলনায় কম উকালতনামা বিক্রয় লব্ধ অর্থ উপার্জন বিষয়ে আইনজীবীদের আলোচনায় বিষয়টি গুরুত্ব পায় সম্প্রতি। অতীতেও বেশ কয়েকবার একই নাম্বারের একাধিক উকালতনামা আদালতের কাছে দাখিল হলে আইনজীবীরা খতিয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে।
গত পরশু কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির কম্পিউটার অপারেটর বাদশা আলমগীর কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনের সেলিম পেপারসে নীল রঙ এর উকালতনামার কাগজ দেখতে পেলে সেটার সূত্র জানতে চাইলে সেলিম পেপারসের কর্মচারী জানায় জয়িতা প্রেসে উকালতনামা ছাপার অর্ডার দেন সেলিম পেপারসের স্বত্তাধিকারী।
এসময় সংবাদদাতা বাদশা আলমগীর আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদককে ফোনে জানালে তিনি তাতক্ষণাত তার চেম্বারের দুজন আইনজীবী এবং আইনজীবী সমিতির স্টাফ কুতুব উদ্দিনকে পাঠান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। এরপর কুষ্টিয়া মডেল থানায় ফোনে জানালে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে সেলিম পেপারসের সত্বাধিকারী ও তার দোকানের এক কর্মচারীকে ডাবল পাতার ৪৭৫ টি উকালতনাম এবং ট্রেসিং পেপারসহ গ্রেপ্তার করে থানায় সোপার্দ করেন।
আইনজীবী সমিতির আলাপ আলোচনা শেষে গ্রেপ্তার দুজনসহ, প্রেস মালিক ও কচি নামের এক ব্যাক্তি যিনি উকালত নামার অর্ডারটি সেলিম পেপারসে দিয়েছিলেন তাকে সহ ৫/৭ জনকে অজ্ঞাতনামা করে গতকাল সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ থাকায় তার স্বাক্ষরিত এজাহার দায়ের করেন সমিতির সিনিয়র সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. নিজাম উদ্দিন।
উল্লেখ্য যে জেলা আইনজীবী সমিতি কুষ্টিয়ার প্রধান ব্যয় নির্বাহ ও সঞ্চয় খাতের অন্যতম উৎস উকালতনামা বিক্রয়। দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র জাল উকালতনামা, দরখাস্ত কোর্টে ব্যবহার করে অবৈধ উপার্জনে লিপ্ত রয়েছে, যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির কয়েকবারের নির্বাচিত ও বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শেখ মুহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, নির্বাহী কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে অবগত কতে পদক্ষেপ নিয়েছি জালিয়াতির বিরুদ্ধে, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় প্রতিনিধির মাধ্যমে তদারকি করছি প্রতিটি বিষয়, আইনজীবীদের আয়ের উৎস জালিয়াতি চক্রের কোনো সদস্যকে বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া হবেনা, অপরাধী যত ক্ষমতাধর কিংবা খ্যাতনামা হোক, কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অর্ধ সহস্রাধিক আইনজীবীর অধিকার ও হক নষ্টের জবাবদিহিতা তাকে করতেই হবে।