মোঃ রবিউল ইসলাম হৃদয় (কুষ্টিয়া) : কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি এলাকা থেকে নিখোঁজের ২১ দিন পর নাজির আহমেদ হিরু (৪৬) নামের এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যার সাথে জড়িত মূলহোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত হিরু জগতি এলাকার বশির আহমেদ এর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকাল ৪ টার সময় কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর সকাল সন্ধ্যা গলি এলাকার একটি ভাড়া বাসার পরিত্যাক্ত আম বাগানের ভিতর থেকে মাটি খুড়ে এই লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বারখাদা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে জনি হোসেন (২৫) ও বারাদী কানাবিলের মোড় এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে তুষার হোসেন (২২)
নিহত হিরুর পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টার সময় ইজিবাইক চালানোর সময় যাত্রী নিয়ে জগতি এলাকা থেকে রওনা দেন নাজির আহমেদ হিরু। তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। দিন পেরিয়ে রাত হয়ে আসলেও হিরু বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সবখানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। কিন্তু কোথাও কোন সন্ধান মেলেনি। পরবর্তীতে গত ০৪/০৮/২০২৩ ইং তারিখে নিখোঁজ যুবক হিরুর পিতা বশির আহম্মেদ কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। যার জিডি নং- ২৯১।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, নিহত হিরুর পিতা বশির আহম্মেদ নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করার পর পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ কয়েকদিন যাবত পুলিশ এই তদন্ত পরিচালিত করেন। পরে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকাল ৪ টার সময় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে জনি ও শফিকুলকে আটক করে। আটকের পর পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে আসামীরা ইজি বাইক চালক হিরুকে হত্যার ব্যাপারে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। আটককৃত আসামীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমানের নেতৃত্ব কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশএর একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। প্রায় দেড়ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর সকাল সন্ধ্যা গলি এলাকার একটি ভাড়া বাড়ির পরিত্যাক্ত আমবাগানের এক কোনা হতে মাটি খুড়ে নিখোঁজ হিরুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
এসময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তী নাথ,কুষ্টিয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু রাসেল, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দবির উদ্দিন,কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের টিম সহ কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের টিম।
এবিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তী নাথ জানান,আমাদের কাছে অভিযোগ ছিলো গত ৩ আগস্ট জগতী থেকে হিরু নামের একজন ইজিবাইক চালক নিখোঁজ হয়েছে এবং তার ইজিবাইক টাও পাওয়া যাচ্ছিলো না। তার পরিবারের সন্দেহ কেউ তাকে অপহরন করে তার ইজিবাইকটি ছিনতাই করে বিক্রয় করে দিয়েছে৷ এই জিডিটা পাওয়ার পর থেকে জেলা গোয়েন্দা শাখা সহ সবাই মিলে আমরা কাজ করি। এক পর্যায়ে আজকে একজন সন্দেহভাজনকে আমরা গ্রেফতার করি। তার দেওয়া তথ্যমতে আমরা আরেকজন যিনি অন্য একটি মামলায় মিরপুর থানায় আটক হয়েছিলো। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে সে জানিয়েছে পূর্ব মজমপুরের মোজাফফর আহম্মেদের বাড়িতে সে ভাড়াছিলো। সেখানে এই ইজিবাইক চালককে লেপতোষক নিয়ে যাবে বলে সে এখানে নিয়ে এসে হত্যা করে। আর ইজিবাইকটি বিক্রয় করে দিয়েছে পাবনাতে নিয়ে গিয়ে এবং এখানেই আমবাগানে সেই লাশ গুম করে রেখেছে। আমরা তার দেওয়া তথ্যমতে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ,ডিবি পুলিশ সহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ এখান থেকে মাটি খুড়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।