মোঃ রবিউল ইসলাম হৃদয়: কুষ্টিয়া পৌরসভার টেন্ডার জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও বিভ্রান্ত ছড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার সময় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের দুই শতাধিক নেতা কর্মীরা শহরের থানা ট্রাফিক মোড়ে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা মামলা প্রত্যাহারের জন্য ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ,যুবলীগ,সেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয়া হয়।
সমাবেশে উপস্থিত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু বলেন,কুষ্টিয়া পৌরসভার ১০টি হাট-বাজার ইজারার দরপত্র পৌরসভার মেয়র কার্যালয়ে জমা দেওয়ার সময় যে ঘটনা ঘটেছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামীদের নামে মামলা করা হোক। মামলায় আওয়ামীলীগ যুবলীগ,সেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের আসামী করার ব্যাপারটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আওয়ামী লীগের মান ক্ষুন্ন করার জন্য যারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না তাদেরকে মামলার আসামী করা হয়েছে।
তিনি মামলা প্রত্যাহারের দাবি তুলে বলেন, কুষ্টিয়ায় মাহবুবউল আলম হানিফ ভাইয়ের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে ও জামাত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে একটি অপশক্তি।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন,মামলার নতুন নাটক সাজাতে গত শনিবার রাতে পৌরসভাতে চুরির ঘটনা ঘটানো হয়। এতে টাকা পয়সা চুরি না হলেও ফাইল নথি সহ হার্ডডিস্ক চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, এসব নাটক মানুষ বুঝে গেছে। টেন্ডারের ঘটনায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা কেউ সিসি ফুটেজে নেই। সিসি ফুটেজে আসামীদের উপস্থিতি পাওয়া যাবে না বলেই চুরির নাটক সাজানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম স্ত্রী সহ দুদুকের মামলায় জেল থেকে বেড়িয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা বেড়িয়ে আসবে বলে তিনি জানান। এ সময় তিনি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহার ও মূল আসামীদের নামে মামলা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়ে এই আন্দোলন শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত গড়াবে বলে উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত,চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারী কুষ্টিয়া শহর এবং শহরতলীর ১০ টি হাট-বাজার পহেলা বৈশাখ হতে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এক বছর মেয়াদী টোল আদায়ের লক্ষ্যে ইজারার দরপত্র আহবান করে কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ। উক্ত তারিখ হতে ২২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি করা হয় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারী (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১টা পর্যন্ত সিডিউল জমা প্রদানের সময় নির্ধারণ করা হয়। ঘটনার দিন টেন্ডার বক্সে দরপত্র ফেলতে গেলে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ নেতারা পুলিশের সামনেই হাত থেকে জোরপূর্বক দরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলার অভিযোগ তুলে ইব্রাহীম হোসেন মিরাজ নামে এক ব্যক্তি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। টেন্ডার নাটকীয়তার পর সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়রের কার্যালয়ে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলার আসামীদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। এদিকে প্রকাশ্যে দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ফুটেজে মামলার আসামী কাউন্সিলর,আওয়ামী লীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ,ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতির সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে জেলাব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়।