রবিউল ইসলাম হৃদয় :কুষ্টিয়া খোকসার গড়াই নদীতে রবিউল ইসলাম (৩৬) নামের এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর তার বোনের দায়ের করা হত্যা মামলায় চর মিলপাড়া এলাকায় মোঃ রনি (২২) নামের যুবককে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছে রনির পারিবার।
সুত্রে জানা যায়, গত ৭ই নভেম্বর সকাল ১১ টার সময় কুষ্টিয়া খোকসা থানা এলাকার হাওয়া ভবন সংলগ্ন গড়াই নদীতে অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পরে লাশটি তার পরিবার সনাক্ত করার পর জানা যায় লাশটি রবিউল ইসলাম (৩৬) নামের যুবকের। রবিউল ইসলাম কুমারখালী চাপড়া ইউনিয়নের সাওতা আবাসনে বসবাস করতেন। নিহত রবিউলের বড় বোন বিলকিস খাতুন কুষ্টিয়া শহরতলীর চর মিলপাড়া এলাকার মোছাঃ তাসলিমা খাতুনের সাথে তার ভাই রবিউলের সাথে অবৈধভাবে অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে গত ৮ ই নভেম্বর রনি সহ তার পিতা শিবাকে আসামী করে ৬ জনের নামে খোকসা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ৪ ই নভেম্বর রবিউল বাড়ি থেকে আসার সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাসলিমা নামের মহিলার সাথে যোগাযোগ করে বের হয়। তারপর ৩ দিন তার কোন খোজখবর না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন অনেক খোজাখোজি করেও পায়নি। পরে ৭ ই নভেম্বর খোকসায় গড়াই নদীতে রবিউলের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। ঘটনার পর ৮ই নভেম্বর রবিউলের বড় বোন খোকসা থানায় একটি হত্যা মামলায় দায়ের করেন। সেই মামলার ৬ নাম্বার আসামী করা হয় রনিকে।
ভুক্তভোগী রনির মা বলেন, আমার ছেলে এলাকার শান্তশিষ্ট ভদ্র ছেলে। আমার ছেলে কখনো এমন জঘন্য কাজ করতে পারেনা। কিছুদিন পর আমার ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিবে৷ যেদিন এই ঘটনা ঘটে সেদিন আমার ছেলে সেখানে ছিলোনা। আমার ছেলে এই হত্যা মামলায় চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে এই মামলা তদন্ত করলে এই মামলার সাথে আমার ছেলের কোন সম্পৃক্ততা পাবেনা প্রশাসন৷ আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
মামলার বাদী নিহত রবিউলের বড় বোন বিলকিস বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে ওই মহিলার সম্পর্ক ছিলো। আমার ভাইকে ওই মহিলা ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাড়িতে ফিরে না আসায় আমরা কয়েকদিন ধরে অনেক খোজাখোজি করেছি। তারপর জানতে পারলাম আমার ভাইকে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। কয়েকদিন পর আমার ভাইয়ের লাশ নদীতে পাওয়ার পর আমি ৬ জনের নামে মামলা করি।
মামলার ৬ নাম্বার আসামী রনির কোন হত্যার সাথে সম্পৃক্ততা ছিলো কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি প্রতিবেদককে জানান, রনির কোন সম্পৃক্ততা পায়নি। রনির নামে মামলা দেওয়া হয়েছে তার কারন রনি ২ নাম্বার আসামীর ছেলে। এ ছাড়া তাকে কিভাবে কারা মেরেছে সেটা আল্লাহ পাক জানেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নৌ পুলিশের এসআই মাহিদুল ইসলাম জানান, মামলার পরে ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জনকে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিলো। তাদের কোন স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়নি।