কুষ্টিয়া,১০-৯-২০২২:- পরিযায়ী পাখির আবাসস্থলকে নিরাপদ রাখা ও বিচরণস্থল সংরক্ষণে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিবছর ‘বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস’ পালিত হয়। “ম্লান করলে রাতের আলো” পাখিরা থাকবে আরো ভালো ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় পালিত হলো বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস -২০২২।
বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন বিবিসিএফ ও মানুষ মানুষের জন্য কুষ্টিয়া এর আয়োজনে সোমবার
১০ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখ সন্ধায় শহরের থানাপাড়া এলাকায় বন্যপ্রণী ও পাখি সংরক্ষণের বিষয়ে একটি জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিবিসিএফ কুষ্টিয়া জেলা ও মানুষ মানুষের জন্য কুষ্টিয়ার সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক নাব্বির আল নাফিজ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন বিবিসিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ও মানুষ মানুষের জন্য কুষ্টিয়ার সভাপতি শাহাবউদ্দিন মিলন।
উক্ত সভায় উপস্থিত থেকে বণ্যপ্রানী ও পাখি সংরক্ষণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন, বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন বিবিসিএফ কুষ্টিয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাব এর সভাপতি ও পাখি গবেষক এস আই সোহেল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত সামাজিক জোটের সিনিয়র সমন্বয়ক মুহাইমিনুর রহমান পলল,আরিফ আহমেদ, সিরিজ খালাসি, আজিজুল,হাজী আলম, রিয়াজ, মিজান, স্বপ্ন প্রয়াস যুব সংস্থার সভাপতি সাদিক হাসান রহিদ,হাবু,মীর কুশল,আলমগীর হোসেন প্রমূখ।
সভায় পাখি গবেষক এস আই সোহেল বলেন, বর্তমান বিশ্বের জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পরিযায়ী পাখিরা মারাত্মক খাদ্য সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থা দূর করা দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য। পরিযায়ী পাখিদের সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়াতে ২০০৬ সাল থেকে এই দিবস পালন শুরু করা হয়। পরিযায়ী পাখিদের বিচরণ ও সংরক্ষণে সরকার সর্বদাই সচেষ্ট।
পাখিদের বিষয়ে শাহাবউদ্দিন মিলন বলেন, পরিযায়ী পাখিদেরকে আগে অতিথি পাখি বলা হতো। কিন্তু নিবিড় গবেষণায় দেখা গেছে যে, এরা অতিথি নয়। বরং যে দেশে যায় সেখানে তারা ডিম পাড়ে এবং সেই ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বের হওয়া পর্যন্ত বাস করে। অর্থাৎ বছরের বেশ কয়েকমাস এসব পাখি ভিনদেশে থাকে; নিজ দেশে বাস করে স্বল্প সময়ের জন্য। সাধারণত হেমন্তের শুরুতে বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখি আসার মওসুম শুরু হয়। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে খঞ্জন, সুইচোরা, চ্যাগা ও চা পাখি, চখাচাখী মানিকজোড়, গেওলা ও গুলিন্দা।
সভাপতির বক্তব্যে সাংগঠনিক নাব্বির বলেন, বাংলার সমতল ও সুন্দরবনকে লক্ষ্য করে প্রায় আটটি পথ ধরে পাখিরা আমাদের দেশে আসে। দেশের হাওর এলাকা ও বিস্তৃত সুন্দরবন এলাকা পরিযায়ী পাখিদের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া সুনামগঞ্জের হাওর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চিড়িয়াখানাসহ বেশ কিছু এলাকায় এই পাখিদের দেখা যায়। এছাড়া আরও এক লাখের বেশি পাখি সামুদ্রিক অঞ্চলে বেড়াতে আসে। কিন্তু নানাভাবেই ক্ষতি করা হয় এসব পাখিদের। আইন থাকা স্বত্বেও অনেকেই মানেন না সেসব। শুধুমাত্র আইনের প্রয়োগ করলেই কেবল পরিযায়ী পাখি এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষা করা সম্ভব না, সেই সঙ্গে প্রয়োজন জনসচেতনতা।