সাইফুল ইসলাম।। দৌলতপুরে পাটের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের মুখে হাসি নেই। কারণ পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এবছর পাট জাগ দেওয়া সময় শুরু হয়েছে, এরপরও দৌলতপুর উপজেলার অধিকাংশ কৃষক এখনো পাট কাটা শুরু করেননি। কারণ এরই মধ্যে যারা পাট কেটেছেন তারা জাগ দেওয়ার জন্য পানি পাচ্ছেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি না হওয়ায় এবার দৌলতপুর নিচু এলাকাগুলোও রয়েছে পানিশুন্য।
দৌলতপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যা গত বছরের তুলনায় বেশি।
এবছর দৌলতপুর উপজেলার আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। পাট চাষে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম না করলেও এখন পাট কাটা মৌসুমে পানির অভাবে পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
দৌলতপুর প্রাগপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের কৃষক খেলাফত আলী জানান,পূর্ব পুরুষের আমল থেকে পাটের আবাদ করে আসছেন তিনি। পাটের আবাদ করে লোকসান হচ্ছে।
তিনি বলেন, এলাকায় পাট জাগ দেয়ার জায়গার ভীষণ সংকট। এ সময়ে পুকুরেও পানি থাকে না। গত বছর পুকুরে পাট জাগ দিয়ে স্যালো মেশিন চালিয়ে প্রতিদিন পুকুরে পানি ভরতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে। ফলে গত বছর পাটের আবাদ করে লোকসান হয়েছে। এ বছর ৪বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করে পাট বেশ ভাল হয়েছে। উৎপাদন ভাল হবে। তবে, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে সমস্যা থাকায় মাঠ থেকে দূরে নদীতে পাট নিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বেশি হয়ে যাবে।
প্রাগপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের কৃষক ফকির আলী জানান, বৃষ্টি বেশি হলে সমস্যা ছিল না। সময়টা এমন যে, ধান মরিচ এবং পাটের জন্য পানি দরকার। এই সময়ে বৃষ্টি হলে কৃষকের উপকার হয়। সে অবস্থা এবার নেই।
অতিবৃষ্টি হলে পাট জাগ দেওয়ার কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এ বছর বৃষ্টিপাত হয়েছে খুবই কম। মাঠ-ঘাটে কোথাও পানি নেই। এ অবস্থায় পাট কাটার সময় হলেও পাট জাগ দেওয়ার অসুবিধার কথা ভেবে পাট কাটতে পারছেন না।
এ বিষয়ে দৌলতপুরের কৃর্ষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, এ বছর মাঠে পাটের অবস্থাও ভালো। এখন পাট কাটার সময় চলছে কিন্তু বৃষ্টি নেই। মাঠ-ঘাটে পানিও নেই। কৃষক অপেক্ষায় আছে, বৃষ্টি হলে তারা পাট কাটা শুরু করবে অনেকে। তবে, আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচালে অল্প খরচে পাট পচানো সম্ভব। এ পদ্ধতিতে পাটের মানও ভালো হয়।