শিরোনামঃ
কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার ওসির বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ সৌদি’তে সড়ক দূর্ঘটনা নি’হত সবুজের বাড়িতে : স্বজনদের আহাজারি খানসামায় মধ্যে রাতে আগুন লেগে গরু,ছাগল ও হাঁস-মুরগি পুড়ে ছাঁই দৌলতপুরে জমি কিনে প্রতারণা স্বীকার প্রতিবন্ধী পরিবার ঝিকরগাছায় ইভটিজিংয়ের আত্মহত্যার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। ঝিকরগাছায় বখাটেদের উত্ত্যক্ত সইতে না পেরে স্কুল ছাত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা। বাউফলের ছেলে সোহান;শ্বশুরের বাসায় ঘুরতে গিয়ে খুন,আটক-৪ আন্তঃজেলা গরু চোরচক্রের মূল হোতা পুড়াপাড়ার রনি কারাগারে কেশবপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিলের কর্মসুচি সফল করার লক্ষে এক প্রস্তুতি সভা চাকুরির মেয়াদ নেই;তবুও অধ্যক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান

কাছের বন্ধু গ্রাম পুলিশ (পর্ব-১)

সহ সম্পাদকঃ মাহফুজ হৃদয়
  • আপডেটের সময়। সোমবার, ২৩ মে, ২০২২

লেখক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা
এএসপি শহিদুলাহ।

গ্রাম পুলিশ শব্দটার সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত৷ এই গ্রামপুলিশের আগের নাম ছিল
চৌকিদার৷ তিনি ছিলেন গ্রামাঞ্চলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত গ্রাম পঞ্চায়েতের নিযুক্ত কর্মচারী। একজন চৌকিদার এক বা একাধিক গ্রামের পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতন। ব্রিটিশ রাজ কর্তৃক ১৮৯২ সালের আইন ১ এর মাধ্যমে চৌকিদারি আইন সংশোধন ও ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিকল্পিত গ্রাম সরকার পদ্ধতির মাধ্যমে চৌকিদার লব্দটি বিলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে সে অামলের চৌকিদার বর্তমানে গ্রাম পুলিশ নামে পরিচিত৷

প্রথম পর্যায়ের ব্রিটিশরাজ আমলেও চৌকিদারি প্রথা বিদ্যমান ছিল। সে সময় গ্রাম পঞ্চায়েত গ্রামের নিরাপত্তার দিকটা দেখাশোনা করতো। চৌকিদার ছিল পঞ্চায়েত কর্তৃক নিয়োজিত কর্মচারী। তাদের ওপর এক বা একাধিক গ্রামের পাহারার দায়িত্ব ছিল। অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে পঞ্চায়েতের মর্যাদা হ্রাস করা হয় এবং জমিদারি প্রথার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন চৌকিদাররা জমিদারের কর্মচারীতে পরিনত হয়। সেসময় জমিদাররা তাদের এলাকার নিরাপত্তা ও প্রহরা প্রদানের বিনিময়ে চৌকিদারকে চাকরান জমি প্রদান করতেন৷ সেজন্য জমিদারকে কোনোপ্রকার কর প্রদান ব্যতিরেকেই চৌকিদাররা সেই জমিতে চাষাবাদ করতে পারত।
১৮৫৬ সাল পর্যন্ত, জমিদারের মাধ্যমে চৌকিদার পোষণ চাকরান ভূমির দ্বারাই অব্যাহত ছিল। ১৮৫৬ সালের স্থানীয় পুলিশ আইন অনুসারে কর্নওয়ালিস কোড ১৭৯৩-এর আওতায়
বিলুপ্ত পঞ্চায়েত প্রথা পুনর্জীবিত করার
উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তখন পঞ্চায়েতের সদস্যদের মনোনয়ন প্রদান এবং চৌকিদারদের নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা জেলা প্রশাসকদের ওপর অর্পণ করা হয়। চৌকিদারদের পোষণের ব্যয় নির্বাহের জন্য এ আইনের অধীনে কর আরোপ করার বিধান চালু করা হয়। ১৮৭০ সাল পর্যন্ত চৌকিদারি প্রথা প্রধানত শহুর এলাকা ও বড় বড় গ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। ১৮৭০ সালের আইন ৬ (বিসি)-এর অধীনে চৌকিদারি প্রথা পুনর্গঠন এবং চৌকিদারি সেবা ব্যবস্হা বাংলার সকল গ্রামে সম্প্রসারিত হয়। তারপর চৌকিদারের উপর জমিদারদের নিয়ন্ত্রণের বিলুপ্তি ঘটে। সেসময় থেকে চৌকিদাররা জেলা প্রশাসক নিকট থেকে নিয়মিত বেতন পাওয়া শুরু করেন এবং পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকরা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে জনসাধারণের ওপর চৌকিদারি কর আরোপ করতে শুরু করেন।
১৮৮০-এর দশকে গ্রামাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে ব্রিটিশ রাজ ১৮৯২ সালের আইন ১ এর মাধ্যমে চৌকিদারি আইন ১৮৭০ সংশোধন করেন৷

সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে মুখ্যত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ইউনিয়ন কাউন্সিলকে সহায়তা করার জন্য চৌকিদারদের স্থানীয় সরকার সংস্থার অধীনে ন্যস্ত করা হয়।
১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পিত গ্রাম সরকার পদ্ধতির অংশ হিসেবে চৌকিদারদের গ্ৰাম পুলিশের মর্যাদা দেওয়া হয়৷
এখন চৌকিদাররা ইউনিয়ন কাউন্সিলের অধীনে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তাদের মাসিক বেতন স্থানীয়ভাবে আদায়কৃত অর্থ এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অর্থের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়ে থাকে
একজন সাধারন গ্রাম পুলিশ প্রতি মাসে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩২৫০ এবং সরকারিভাবে ৩২৫০ টাকা বেতন হিসেবে পেয়ে থাকেন৷ গ্রাম পুলিশের প্রতিটি দফাদার মাসে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩৫০০ টাকা এবং সরকারিভাবে ৩৫০০ টাকা বেতন হিসেবে পেয়ে থাকেন৷ থানার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে দফাদার নিযুক্ত থাকেন এবং ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন সাধারণ গ্রাম পুলিশ দায়িত্বরত থাকেন যার অধীনে এক বা একাধিক গ্রাম থাকে৷

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর